পোস্টগুলি

আলোহীন অন্ধকার

ছবি
দু দিন আগে বেগম রোকেয়ার জন্মদিন গেল। আমাদের বাঙালি সমাজের একটা অংশ তাঁর প্রতি যেমন শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, অন্য আরেকটা অংশ জানিয়েছেন তীব্র ক্ষোভ বা ঘৃণা। একজন বেগম রোকেয়াকে অসম্মানিত হতে দেখে বোধসম্পন্ন মানুষ মাত্রের ব্যথিত-বিস্মিত হওয়া স্বাভাবিক। প্রশ্ন হচ্ছে এটি কি আদৌও নতুন ঘটনা? গত বছর বেগম রোকেয়াকে ঘিরে অসম্মানের একটা আবর্তন তৈরি হলেও এবছরও তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে ভাবিনি। যদিও তাঁর জীবদ্দশায় রোকেয়াকে সমাজের রক্তচক্ষু সহ্য করেই এগোতে হয়েছিল। এমনকী মৃত্যুর পর কলকাতায় তাঁকে কবরস্থ পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি। একদল ধর্মান্ধ ফতোয়াবাজ মৃতকে নূন্যতম সম্মান জানানোর পরিবর্তে করেছিল চরম অপমান। তাদের ক্ষোভ ছিল রোকেয়ার ওপর। কারণ তিনি মুসলিম সমাজের রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন তাঁর লেখালিখি আর কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে। নারীমাত্রই অন্তঃপুরবাসিনী নন, সেকথা গলা তুলে বলেছিলেন। তাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ভগিনীরা! চক্ষু রগড়াইয়া জাগিয়া উঠুন, অগ্রসর হউন! মাথা ঠুকিয়া বলো মা! আমরা পশু নই; বলো ভগিনী! আমরা আসবাব নই; বলো কন্যে আমরা জড়োয়া অলঙ্কাররূপে লোহার সিন্ধুকে আবদ্ধ থাকিবার বস্তু নই; সকলে সমস্বরে বলো আমরা মানুষ।...

আমাদের বাতিঘর

ছবি
  আ মাদের স্কুলের পাঠ্য বইতে বেগম রোকেয়া সম্পর্কে পড়ানো হতো। কিন্তু সেখানে তাঁর সম্পর্কে যে ধারণা দেওয়া হতো, সেটা ছিল অসম্পূর্ণ। একটা খণ্ডিত চিত্র মাত্র। তাতে ছকবাধাভাবে বলা হতো তিনি মুসলিম নারীদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তার করেছেন, স্কুল বানিয়েছেন, নারীর কল্যাণে কাজ করেছেন, ব্যস এটুকুই। সম্পূর্ণ রোকেয়া সেখানে অনুপস্থিত। ফলে এই মহীয়সী নারীর পুরোটা উঠে আসেনি আমাদের শৈশবের ক্যানভাসে। বড় হয়ে আর কয়জন তাঁর সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখাই! শৈশবের ওই জানাটুকু আমাদের মগজে তথ্য হিসেবে থেকে গেছে। তথ্যগুলো ভুল নয় মোটেও। কিন্তু বড় হয়ে যখন তাঁর সম্পর্কে জেনেছি, তখন বুঝেছি কতটা খণ্ডিত রোকেয়াকে পাঠ্য বই তুলে ধরেছে। এমনটা কেন! দুঃখজনক বিষয় হলো তাঁকে আড়ালের এই চেষ্টা দুই দুজন নারী রাষ্ট্রপ্রধানের সময়ও থেমে থাকেনি। বাকিদের সময়কার কথা আর নাই বলি। পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতর বাসরত আমাদের সমাজ সচেতনতার সঙ্গে আড়াল করতে চেয়েছে রোকেয়া সম্পর্কিত তথ্য। তাদের ভেতর বুঝি একধরনের ভয় কাজ করেছে– তাঁর দেখানো পথ হয়তো পুরুষতান্ত্রিকতার বিপক্ষে দাঁড়ানোর হাতিয়ার হতে পারে। তাই আমরা জানতে পারিনি, একজন রোকেয়ার সংগ্রাম কেবলমাত্র নার...

What We Hold and Lose

ছবি
H umans often show an innate disregard for what comes easily. Where prohibition looms, desire intensifies. The allure of the forbidden frequently outweighs the charm of the accessible. As a result, easily obtained things tend to lose their perceived value. Economic theory echoes this tendency: the law of supply and demand suggests that value is preserved only when supply remains lower than demand. When abundance floods availability, interest fades. Accessibility, paradoxically, breeds neglect. Love, too, can suffer this fate. What rests gently in our palms may slip away unnoticed, only to be mourned later. While not universal, many experience this as an inevitable curse. Familiarity veils affection, and that veil confuses us repeatedly. Humans seem to struggle to love with full vulnerability. The brain, in its quiet fight for survival, instinctively shields us, quickly dispatching perceived threats to hidden chambers of the mind. Perhaps this is why we forget even our deepest sorrows. ...

তুমি প্রতিহিংসার আগুনে পোড়াও দেশ জননীর আঁচল

ছবি
আ গামীকাল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল(ICT) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে রায় ঘোষিত হতে যাচ্ছে, তা একদিকে যেমন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নাটকের চূড়ান্ত দৃশ্য, অন্যদিকে তেমনি আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এক গভীর সংকটের দৃষ্টান্ত। এই বিচার কোনো স্বচ্ছ আদালত কাঠামোয় ভেতর সংঘটিত হয়নি। হয়েছে একটা বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, যার নিজেরই সাংবিধানিক ভিত্তি প্রশ্নবিদ্ধ, এবং যার কর্মকাণ্ডে জনগণ এরই মধ্যে তিতিবিরক্ত। বিচারের যে রায় ঘোষিত হতে যাচ্ছে, সেই বিচারপ্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। আন্তর্জাতিক আইন ও ন্যায়বিচারের মানদণ্ড অনুযায়ী, অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে বিচার শুধুমাত্র কঠোর শর্তসাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য। এখানে সেই শর্তগুলো কি আদৌও মানা হয়েছে? না হয়নি। অভিযুক্তের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, আইনজীবী নির্বাচনের অধিকার, কিংবা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বোঝার সুযোগ–কোনোটিই নিশ্চিত করা হয়নি। তাছাড়া বাংলাদেশের মতো একটা দেশে যেখানে, একটা খুন কিংবা ধষর্ণ মামলার নিষ্পত্তি হতে কমপক্ষে ৩ থেকে ৬ বছরের মতো সময় লেগে যায়,সেখানে সম্ভবত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে দ্রুততম একটা ...

শান্ত স্বরে বলে যাওয়া শক্তিশালী এক আখ্যান

ছবি
হি উম্যানস ইন দ্য লুপ’ সিনেমাটি শুধু নানাস্তরী নয়, এর ভেতর মুখ গুঁজে আছে এক ধরনের নীরব ক্ষমতায়নের ইশারা। প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডেটা লেবেলিং নিয়ে কথা বলা হলেও, এর মূল বিষয়বস্তু মানুষ। মানুষের জন্যই তো প্রযুক্তি–নাকি প্রযুক্তির জন্য মানুষ? এমন ভাবনাও বুঝি উসকে দেয়  হিউম্যানস ইন দ্য লুপ। এ গল্পের কেন্দ্রে আছে নেহমা নামে একজন আদিবাসী নারী, গল্পটা মূলত তাকে ঘিরেই এগিয়েছে। নেহমা ওরাঁও জনগোষ্ঠীর সদস্য, বিবাহবিচ্ছেদের পর সে দুই সন্তান নিয়ে জন্মগ্রাম ঝাড়খণ্ডে ফিরে আসে। সেখানেই সে চেষ্টাচরিত্র করে এআই ডেটা লেবেলার হিসেবে কাজ জোটায়। এরপর শুরু হয় মনদুয়ারে কড়া নাড়ার মতো এ কাহিনির মূলযাত্রা। যার গভীরে ধীর লয়ে কথা বলে যায় তাদের পারস্পারিক সহনশীলতা, নারীর মাতৃত্ব, এবং প্রাচীন জ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির সাংঘর্ষিক ও সহাবস্থানের গল্প। নেহমার চরিত্রে অভিনয়শিল্পী সোনাল মধুশঙ্কর, সংযত অথচ গভীর অভিনয় চলচ্চিত্রের শান্ত অথচ ঋজু লয়ের সঙ্গে আগাগোড়া দারুণ সঙ্গত করে গেছে। নেহমার চরিত্রটিকে দুটি ভিন্ন জগৎকে সামলানোর দায়িত্ব পালন করতে হয়—একটি তার পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া কৃষ্টি ও বনভূমির ঐতিহ্য গাঁথা...

তুমি গেছো, স্পর্ধা গেছে...

ছবি
তু মি না থেকেও থাকার অধিক আছো। এবছর তুমি শতবর্ষী হলে জানো নিশ্চয়ই! প্রিয় ঋত্বিক, শতবর্ষের জন্মদিনে শুভেচ্ছা ভালোবাসা জেনো!  জৌলুশহীন বেশবাস, শেভহীন মুখাবয়বের ঋত্বিক নামের ঋজু মেরুদণ্ডের মানুষটাকে আমরা অনেকেই সচোক্ষে দেখিনি- কিন্তু তাসত্ত্বেও মানুষটা আমাদের প্রিয় একজন। সাহসী-অকপট মানুষকে দিনশেষে মানুষ খুঁজে-- জানো তো- প্রিয় ঋত্বিক। তুমি সেই সাহসী-একবগ্গা আর সপাটে বলতে জানা মানুষ। বুক জুড়ে যাঁর ছিল অতলান্ত স্বপ্ন-- স্বদেশের মাটি হারানোর হাহাকার। তুমি খুব চেষ্টা করেছিল-- তোমার সাহসের বীজ ছড়িয়ে দিতে। কিন্তু পারোনি। আমরা নিতান্তই লক্ষ্ণীমন্ত হয়েছি স্রেফ। অন্যায়- অনাচারে রুখে দাঁড়ানোর আগে লাভ-ক্ষতির হিসেবটা আমাদের কাছে বড়।  ক্রান্তিকালেও আমরা কেউ তোমার মতো গলা তুলে বলতে শিখিনি, 'বিক্ষুব্ধ সময়ে মুজরো' দেখছো! আমরা ইঁদুরের গর্তে লুকিয়ে থাকা সেইসব বেড়াল-- সময়ে যারা গায়ে চড়াই মিথ্যে বাঘের ছাল। আমাদের ভণ্ডামি আর ফাঁপা জীবনের প্রতি আসক্তি, তোমাকে ক্ষব্ধ করেছে প্রতিনিয়ত! অভিমান নিয়ে ছেঁড়া চটি ঘষটে ঘষটে তুমি চলে গেছো... নীতার পিছু পিছু। দলছুট মেঘেরা এসে ঢেকে দিয়েছে জ্বলজ্বলে সেই তারার ...

Happy 60th Birthday Dear Shah Rukh Khan

ছবি
S hah Rukh Khan, affectionately known as the ‘King of Bollywood has lived a journey that reads like a modern legend. From the modest lanes of Delhi to the dazzling skyline of Mumbai, his ascent to stardom is not merely cinematic, but deeply human. He began his acting career on television in the late 1980s, quietly weaving himself into the hearts of viewers. Then came Deewana in 1992, his big-screen debut a film that marked the beginning of a career both meteoric and enduring. In the early years, he dared to play the anti-hero, embracing complex roles in Baazigar and Darr, long before he became the quintessential romantic icon of Indian cinema. But Shah Rukh Khan’s appeal goes far beyond the silver screen. He is a man of immense talent, generosity, and a sparkling wit that endears him to millions not just in India, but across the globe. I believe it is his human qualities, more than his cinematic triumphs, that have truly won the world’s affection. There are countless people who may nev...